প্রকাশিত: Sat, May 18, 2024 12:36 PM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 9:47 AM

[১]তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের উদ্বেগ শেখ হাসিনাকে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ

এম খান: [২] ভারতে চলমান লোকসভা নিব্যাচনের মধ্যেই দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেন।

[৩] জানুয়ারিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনর্নির্বাচিত হওয়ার এটাই ভারতের কোনো শীর্ষ কর্মকর্তার সফর।

[৪] সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা. পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। 

[৫] প্রশ্ন উঠেছে, কেন তিনি এ সময় বাংলাদেশ সফর করেছেন।

[৬] সম্প্রতি চীন ও বাংলাদেশের মধ্যকার তিনটি বিষয় ভারতের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে:

[৬.১] গতমাসে ঘোষণা করা হয় প্রথমবারের মত বাংলাদেশ ও চীনের সামরিক বাহিনীর যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এটার নাম চীন- বাংলাশে গোল্ডেন ফ্রেন্ডসিপ। এ যৌথ মহড়ায় দুই দেশের সামরিক বাহিনী ছিনতাই ও সন্ত্রাসবিরোধী প্রশিক্ষণে অংশ নিবে।

[৬.২] বাংলাদেশ চীনের নমনীয় শর্তে প্রায় ৫শ’ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে। এই অর্থ কাঁচা মাল ও বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ শক্তিশালি করতে ব্যবহার করা হবে। এই প্রবণতা ভারতকে উদ্বিগ্ন করেছে। ২০১৬ সালে চীনের কাছে বাংলাদেশের ঋণ ছিল ৯৭ কোটি ডলার যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬শ’ কোটি ডলারে। বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের ২৪ শতাংশ এখন চীনের।

[৬.৩] তৃতীয়টি হচ্ছে অতি গুরুত্বপূর্ণ, চীনের প্রস্তাবিত তিস্তা নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা। বাংলাদেশের ৪র্থ বৃহত্তম নদী তিস্তা ৪০ শতাংশ খাদ্য উৎপাদনে সহায়ক।

[৮] শেখ হাসিনা তিস্তা নদীর পানির বৃহত্তর অংশ দাবি করছেন কিন্ত এখনো কোন চুক্তি হয়নি।

[৯] ঢাকা এই নদীর নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা, বাঁধ মেরামত ও শুস্ক মৌসুমের জন্যে জলাধার নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এই প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ১শ’ কোটি ডলার।

[১০] চীন এ পরিকল্পনায় অংশ নিতে খুবই আগ্রহী, দেশটি ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি পরিকল্পনা পেশ করেছে। ভারতও এ বিষয়ে আগ্রহী তবে তারা এখনও কোন পরিকল্পনা পেশ করেনি।

[১১] যদি চীন প্রকল্প বাস্তবায়ণে অনুমতি পায় তবে ভারতের উদ্বেগের বিশেষ কারণ রয়েছে।

[১২] তিস্তা শিলিগুড়ি করিডোরের খুব কাছে, এটা পুরো দেশের সঙ্গে উত্তরপূর্ব ভারতের যোগাযোগের একটি সংকীর্ণ কিন্ত নিরাপত্তার জন্যে অতীব গুরুত্বপূর্ণ করিডোর।

[১৩] এত কাছাকাছি চীনের উপস্থিতি ভারতের জন্যে উদ্বেগের।

[১৪] সার্বিকভাবে এ বিষয়টি পরিস্কার যে চীন ঢাকার ওপর প্রভাব বিস্তার করছে চাচ্ছে। 

[১৫] এ কারণেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন।

[১৬] শেখ হাসিনা ভারতের প্রতিবেশীপ্রথম নীতির সুবিধাভোগী। তিনিও ভারতবিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন।

[১৭] কিন্ত তিস্তা ইস্যুতে দুইদেশের মধ্যে গভীর সংকট ও সংশয় এখনো রয়েছে। 

[১৮] ঢাকার সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেছেন কিন্ত ভারতের বিবৃতিতে এটা বলা হয়নি।

[১৯] ফার্স্টপোস্ট-এর খবরে বলা হয়, কারণ যাই হোক না কেন ভারত পুরো বিষয়টি নজরে রেখেছে।

[২০] রিপোর্টে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লি শেখ হাসিনাকে পরামর্শ দিয়েছে জুন অথবা জুলাইয়ে ভারত সফর করতে যেখানে তিস্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে সর্বশীর্ষ পর্যায়ে। সূত্র: ফার্স্টপোস্ট ইউটিউব